২০২৩-এর ডিসেম্বরে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতা-পরবর্তী ৫০ বছরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি নিয়ে লিখিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সেখানকার একজন অধ্যাপকের মাধ্যমে অণুজীব বিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহার সঙ্গে আমার পরিচয়। আলাপের সূত্রে এক সন্ধ্যায় অটোয়াসহ বাংলাদেশ হাউসে এক কফির নিমন্ত্রণে এসে তিনি ও তার বাবা, বাংলাদেশের আরেকজন প্রথিতযশা অণুজীববিজ্ঞানী ড. সমীর কুমার সাহার প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)-এর কার্যক্রম সম্পর্কে তার নিজ মুখে অবগত হই। এই প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে আমি আগেই কিছুটা জানতাম। তবে, সিএইচআরএফ নিয়ে তাদের স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তার নিজ মুখে শুনে সিদ্ধান্ত নিই ঢাকায় গেলে অবশ্যই প্রতিষ্ঠানটি স্বচক্ষে পরিদর্শন করব। ঠিক দেড় মাস পরেই ঢাকায় যাওয়ার সুযোগ হলো। আমার ঢাকায় যাওয়া জেনে বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা আমাকে সিএইচআরএফ-এর পক্ষ থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান। আমি যেহেতু দীর্ঘদিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছি তাই তিনি আমাকে সংস্থাটির তরুণ গবেষকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার জন্য অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে আমাকে সিএইচআরএফ-এর কার্যক্রম ঘুরে দেখার সুযোগ করে দেন। সেখানেই একুশে পদকপ্রাপ্ত অণুজীববিজ্ঞানী ড. সমীর কুমার সাহার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ এবং তার নিজের মুখে শুনলাম ঢাকা শিশু হাসপাতালের বারান্দায় ভাঙা চেয়ার-টেবিল থেকে কীভাবে সিএইচআরএফ আজকের এই অত্যাধুনিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তার এক অবিশ্বাস্য স্বপ্নের কথা, যে স্বপ্নটি ধীরে ধীরে তাদের হাতের কোমল কিন্তু দঢ় এবং মায়াময় ছায়ায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সিএইচআরএফ প্রতিষ্ঠার পেছনের গল্পটি অনেকেরই হয়তো অজানা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অণুজীববিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করে ১৯৮৩ সালে ড. সমীর কুমার সাহা যোগ দেন ঢাকা শিশু হাসপাতালে টেকনিশিয়ান হিসেবে। বাংলাদেশে তখনও চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয় নিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে কোনো বিভাগ ছিল না। পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা অণুজীববিজ্ঞানে বিদেশে পিএইচডি শেষ করার ঠিক পরদিনই দেশে এসে ১৯৮৯ সালে পুনরায় যোগদান করেন ঢাকা শিশু হাসপাতালে। প্রয়োজনীয় গবেষণাগার ও অবকাঠামো না থাকায় শিশু হাসপাতালের বারান্দায় একটি টুলের ওপরে বসে একাই কাজ শুরু করে দেন সে সময়কার তরুণ এই বিজ্ঞানী। তিনি দেখলেন সেপসিস, নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস এবং টাইফয়েডের মতো জীবাণুবাহিত রোগে শত শত শিশু মারা যাচ্ছে। প্রতিরোধযোগ্য এসব রোগের সংক্রমণ সম্পর্কে আরও ভালোভাবে বুঝে এই ধরনের অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু এড়াতে যে ধরনের ডেটা সংগ্রহ ও গবেষণার প্রয়োজন তার অপ্রতুলতা দেখে তিনি সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ও যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় গবেষণার মাধ্যমে এসব রোগের সংক্রমণ রোধ করতে কাজ শুরু করেন। অবশেষে এই উদ্যোগকে ২০০৭ সালে সিএইচআরএফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান করেন। বর্তমানে সিএইচআরএফ-এর সদর দপ্তরসহ প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোগে দেশের চারটি বড় শিশু হাসপাতালে প্রতিষ্ঠিত অত্যাধুনিক গবেষণাগারের মাধ্যমে শিশুদের সংক্রামক রোগের প্রতিরোধসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সিএইচআরএফ-এর গবেষণার তথ্য-উপাত্ত কাজে লাগিয়ে সরকার শিশু-মৃত্যু হার কমানোর জন্য বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসূচিতে হিব (যরন) ও পিসিভি (চঈঠ১০) ভ্যাকসিন অন্তর্ভুক্ত করার কারণে শিশু মৃত্যুহার হ্রাসে ব্যাপক সাফল্য এসেছে।
বাবার মতো মেয়ে ড. সেঁজুতি সাহার মধ্যেও দেশের মানুষের জন্য কিছু করার তাড়না ছিল। তবে কানাডার বিখ্যাত টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে মলিকিউলার জেনেটিকসে পিএইচডি করার সময় সেঁজুতি সাহার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। শুরু হয় গবেষণার পাশাপাশি ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সংগ্রাম। চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-পরিজনের সাহচর্যে ও নিজের অদম্য মনোবলের কারণে সৃষ্টিকর্তার কৃপায় তিনি ক্যানসারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করেন। পাশাপাশি ক্যানসারের লড়াইয়ের মধ্যেও তিনি ঠিক সময়ে পিএইচডি সম্পন্ন করতে সক্ষম হন। পিএইচডি শেষ করেই বাবার মতো বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের প্রাপ্য চিকিৎসা পরিষেবা নিশ্চিত করার স্বপ্ন নিয়ে ২০১৬ সালে দেশে ফিরে আসেন। যোগ দেন বাবার প্রতিষ্ঠিত সিএইচআরএফ-এ। এক বছরের মাথাতেই তিনি সিএইচআরএফ-এ প্রতিষ্ঠা করেন অত্যাধুনিক জিনোমিক্স সেন্টার। ২০২০ সালে এই সেন্টার থেকেই সেঁজুতি সাহার নেতৃত্বে সিএইচআরএফ-এর গবেষকরা বাংলাদেশে প্রাপ্ত নমুনা থেকে সংগ্রহকৃত নতুন করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সফলভাবে উন্মোচন করেন। এছাড়া, সেন্টারটি থেকে ইতোমধ্যে ৬০০০-এর বেশি জীবাণুবাহিত ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক ও ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স সফলভাবে উন্মোচিত হয়েছে যার কারণে এসব জীবাণুবাহিত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকার সম্ভব হচ্ছে। সিএইচআরএফ দেশের বেশ কটি হাসপাতালের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে তরুণ-তরুণী বিজ্ঞানী তৈরি করছে এবং গবেষণা চালিয়ে মানুষের জীবন বাঁচানোর স্বপ্ন বাস্তবায়নের মহৎ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
দেশে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে, বিশেষ করে মেয়েদেরকে গবেষণায় উৎসাহিত করতে ‘গড়ব বিজ্ঞানী, সাজাব বাংলাদেশ’ স্লোগানে ২০২২ সাল থেকে সিএইচআরএফ যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তা অতি প্রশংসনীয়। যদিও আমাদের দেশে গবেষণার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সবাই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন, বিভিন্ন সামাজিক কারণে দেশে গবেষণার ক্ষেত্রে নারীরা পিছিয়ে আছেন। এই প্রেক্ষিতে, সিএইচআরএফ-এর এই উদ্যোগে নারীদের গবেষণায় আগ্রহী করতে যে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী। আমার বিশ্বাস সিএইচআরএফ-এর এসব কর্মসূচির মাধ্যমে ভবিষ্যতে দেশে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার বিকাশ ঘটবে এবং বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহার মতো অনেক নারী বিজ্ঞান গবেষণায় উৎসাহী হবেন। আমরা অত্যন্ত ভাগ্যবান যে, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের সর্বস্তরে সবার, বিশেষ করে মেয়েদের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ ও তাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। অতি সম্প্রতি জাতিসংঘের মেয়েদের জন্য বিজ্ঞানের নবম আন্তর্জাতিক দিবসের অ্যাসেম্বলিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি ন্যায্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ভবিষ্যতের জন্য বিজ্ঞানের ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রয়োজন।’ তিনি নারীরা যাতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নেয় সেজন্য অবশ্যই সঠিক নীতি ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সিএইচআরএফ পরিদর্শনের পর আমার উপলব্ধি এই যে, আমাদের উদীয়মান এবং মেধাবী অনেক তরুণ নারী গবেষক রয়েছেন যাদেরকে সরকারের সঠিক নীতি ও কার্যক্রমের মাধ্যমে উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে বাংলাদেশে বিজ্ঞান গবেষণা এবং এতে মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেক এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণার সংস্কৃতি গড়ে না ওঠায় আমাদের অনেক হাসপাতাল থাকলেও গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও অবকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত উদ্যোগে গত ১৫ বছরে দেশে ১৮,০০০-এর মতো কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। আমার বিশ্বাস, কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো তথ্য ঘাটতি তথা ডেটা গ্যাপ পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, এটি করতে হলে এসব কমিউনিটি ক্লিনিকের অবকাঠামোগত ও কারিগরিসহ অন্যান্য সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং সিএইচআরএফ-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য একটি কমন নেটওয়ার্ক ব্যবস্থার মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। আমি মনে করি সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিভিন্ন দেশি-বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে সংযুক্ত করে দেশে গবেষণার মান উন্নয়ন করা সম্ভব। আমার মতে কমিউনিটি ক্লিনিক বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্যব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু তথা ‘নিউক্লিয়াস’ হিসেবে কাজ করতে পারে। সেভাবে এটিকে তৈরির জন্য অনেক কাজ করা দরকার। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, সিএইচআরএফ, আইসিডিডিআর,বি-এর মতো গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিলে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা মানসম্মত নয়। আর গবেষণার সুযোগও সীমিত। এ খাতে সরকারি বরাদ্দও অনেক কম। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে গবেষণার বিষয়ে সরকারি পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ নেই এবং এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালাও তেমন নেই বা থাকলেও তার সঠিক কোনো বাস্তবায়ন নেই। এই বিষয়গুলোর দ্রুত সমাধান করা জরুরি। সারাদেশের হাসপাতালগুলোকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় এনে অণুজীববিজ্ঞানে গবেষণা চালানোর জন্য অবকাঠামো তৈরি করা ও অণুুজীববিজ্ঞানী তৈরি করে মানুষের জীবন বাঁচানোর লক্ষ্য নিয়েই সিএইচআরএফ কাজ করে যাচ্ছে। সিএইচআরএফ অণুজীববিজ্ঞানে সরকারকে গবেষণা প্রচেষ্টার অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। সরকার এক্ষেত্রে সিএইচআরএফ-এর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনা করতে পারে।
ড. সমীর কুমার সাহা ও ড. সেঁজুতি সাহা ভালো সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিদেশে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরে এসেছেন মানুষের জন্য কাজ করতে। তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন সিএইচআরএফ-এর মতো প্রতিষ্ঠান যার মিশন হচ্ছে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে জীবন বাঁচাতে তথ্য ও উপাত্তভিত্তিক গবেষণা এবং পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের গড়ে তোলা। বাংলাদেশের মানুষও যাতে রোগ-ব্যাধিতে বিদেশের মতো গুণগত ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা পায় এজন্যই তাদের এই সংগ্রাম। বর্তমানে অনেক তরুণ ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতি বছর পশ্চিমা দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন এবং সেখানেই তারা উন্নত জীবনের আশায় থেকে যাচ্ছেন। কিন্তু তারা এর ব্যতিক্রম। ক্যানসার থেকে আরোগ্য লাভ করে ড. সেঁজুতি সাহা তাঁর জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার স্বপ্ন তিনি সিএইচআরএফ-কে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবেন ‘যেখানে রোগীদের সেসব ডায়াগনস্টিক পরিষেবা প্রদান করা হবে, যা এখন সাশ্রয়ী মূল্যে দেশে পাওয়া কঠিন বা অসম্ভব। সেই কেন্দ্র শুধু পরীক্ষার রিপোর্টই দেবে না, প্রয়োজনের সময় একজন রোগীর যে পরিষেবার প্রয়োজন হয়, তার সবটুকুই দেবে।’ যেমনটি তিনি টরন্টোতে ক্যানসার চিকিৎসার সময়ে পেয়েছেন। বর্তমানে সিএইচআরএফ-কে অনেক নমুনা পরীক্ষা করতে বিদেশে পাঠাতে হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে সিএইচআরএফ-এর সক্ষমতা বৃদ্ধি করলে ভবিষ্যতে দেশেই এসব নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এর ফলে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।
সিএইচআরএফ-এর মতো প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে সরকারের উচিত সঠিক নীতি-নির্ধারণ এবং স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক টেকসই উন্নয়ন সম্ভব হবে না। “স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত”; এটি বিশ্বাস না করলে বা এর জন্য স্বাস্থ্যখাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, “যেখানে যার প্রয়োজন তাকে সেখানে নিয়োগ দান”, যা বাংলাদেশে খুব কমই হয়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য খাতে যাদের পড়াশোনা ও অভিজ্ঞতা আছে তাদের মধ্য থেকেই এই খাতের দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা। অকাজে বা কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে যাতে করে সীমিত সম্পদ ও সময়ের যথেচ্ছ অপচয় বন্ধ করা যায়। এতে করে সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
ড. খলিলুর রহমান : কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার












