দাবানল
মাউয়ের দাবানলে ছড়িয়ে গেলে এ পোড়াদহে
প্রাগৈতিহাসিক চিহ্ন হারিয়ে আমি এক ধ্বংসের স্তুপ !
রিয়েলএস্টেটের আর্কষণ তুমিহীন এ বিরান ভূমি —
বাতাসের রন্ধ্রে এখানে মাংসের পোড়া গন্ধ ভাসে —
ক্রুদ্ধ মেঘের ঘর্ষণ —জলবায়ু কণার হ্রাস বজ্রপাতে !
কাঁচা-পাঁকা রোদের দাবীতে — ঘন ঘাসের অরণ্যে
যে বুনো জানোয়ারেরা মশাল মিছিলে আগুন জ্বালালো—
মাৎস্যন্যায়ের চিতায় ওরা ফটাফট পোড়ে জীবন্ত -পার্পল !
প্রত্নতাত্বিক যাদুঘরে সজ্জিত সে সকল জীবাশ্মের নির্দশন!
দেহ-মনের সে প্রয়োজন, পাপ নয় তা জেনেও –
সৌন্দর্যের আকর্ষণ ততক্ষণ, যতক্ষণ সে দূরের আকর্ষণে!
ঐ রাতের চাঁদ দিনের আলোর সমঝোতায় যে চলে —
সামাজিক কৌলিন্যের দ্বিধা দ্বন্দ্বের সংঘাতে
তুমি চলে গেলে ঘোর উষ্ণতর দিন উপেক্ষাতে !
নিরবিচ্ছিন্ন ভাবনায় সংজ্ঞায়িত করবো না তোমাকে !
এ পোড়া বৃক্ষরা জানে শিরীষ পাতার ক্লোরোফিলে
কতো প্রেম জমেছিল আমাদের কিউটিকল প্রণয়েতে !
তোমাকে পেয়েছি আমি, সূর্যাস্তের অলৌকিক তিরোধানে !
হেম- অ্যাবশেসন
মধ্য রাতের নিঃসঙ্গে আজ এ নিদান চরাচরে—
পথ শেষে সবাই যখন আপন ঘরেতে ফেরে —
অসংলগ্ন সময়ের সেই যাদুকরী উপ্যাখানে
পতিত পাতার সাথে আমার গল্পরা যায় বেড়ে।
তোমার হাতের ঘামে, ঝরা পাতাদের প্রস্বেদনে
অশরীরীর ধ্রুপদী নৃত্যে, চন্দ্রফণার লালাভ বৃত্তে —
জাতিস্বর আমি হাঁটি অতীত ইউটোপিয়ার দ্বারে —
চেটে নিই তাবৎ হেমকুচি টক্সিক মেঘের স্কচ -চিত্তে!
গৃহহীন জড়ো পাতা জন্মান্তরে দৈহিক বদলায় —
দন্ত- কর্ণ, লম্বা লেজে পাতা শশকে রূপান্তরিত হয়!
মুটো শশক চন্দ্রালোকের দৈব নিশির শিশির চাটে-
সভ্যতায় থ্যাঁতলায়ে শশক মর্গে অবশিষ্ট হয় ক্ষয়!
চলে যাওয়ার নিয়মে জোয়ার-ভাটার মাইগ্রেশনে
সঞ্চিত তরল দুঃখ—রক্ষীকোষের রন্ধ্রে, বরফে!
টিম্পিশকার স্ফুটনাঙ্কে গলিত পাতা শব মিছিলে
ওসেরিসের বিপ্লবে-, কুঁড়ি জন্মে সবুজ হরফে।
জারকের পঁচন গাঁজনে ভালোবাসা নষ্ট হলে
শেষ হয় কবিতার দিন ! বনভূমি জ্বলে তুরে —
অ্যাড্রিনালে আমি ফিরি ঘরে, যমদূত সাথে যে ঘোরে—
ফেরাতে পারিনা তাকে; অ্যাবশেসনে উড়ে যাই দূরে।
গোলাপী উইগ
তমোহর সন্ধ্যার সজ্জায় সে কি হতে চেয়েছিল পাখি?
অনুস্বরের বৃত্তের কক্ষ হতে ছিটকে বুঝি তাই
পেন্ডুলামের ঝুলন্ত আংটার হুকেতে দোলে!
দিকভ্রান্ত পাখিরা যেমন জাটিঙ্গায় পাহাড়ে, বৃক্ষতে
মাথা ঠুকে আত্মহত্যা করে — তেমনি ব্যর্থ চুরি শেষে
পুলিশের ধাওয়ার শিকার নিগ্রো মেয়েটি দুইবাহু
প্রসারিত করে উড়াল দেয় সে বহুতল শপিংমল হতে !
ইকারুস ভুলেছিল সূর্যের উষ্ণতা মোমের ডানাতে —
মেয়েটি ভুলেছে উচ্চতার পরিমাপ হাতকড়া এড়াতে !
থেৎলে যায় সে তুঁতফল, থকথকে মাথা জমাট রক্তে-
আলগা হয়ে যায় তার আগলা কোঁকড়ানো উইগ —
যেন মৃত্যুবোধে অস্তকোষে সৌন্দর্যের ভেতর কদর্য ফোঁটে !
পকেটের খুচরো পয়সা ঝনঝন ঘূর্ণনে ব্যস্ত ব্যাসার্ধ ভ্রমণে-
গোলাপী চুলের উইগটি তখনও ধরা তার হাতের মুঠিতে !
শপলিফটিং প্রয়োজন, না বাহুল্য সেটা ভুলে কেউ বলে ওঠে, “আহা, কালো মেয়ের গোলাপী চুলের বড় শখ হয়েছে”!
মৃত্যু এক নীরবতা – সকল পাপের উর্ধ্বে সে উপসংহার টানে!









