গ্রিনল্যান্ডকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিলাষ ব্যক্ত করার পরপরই আর্কটিক অঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদারে ওই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক। আর এই ঘোষণার ফলে সোমবার ২.৫ বিলিয়ন ডলারের আর্কটিক নিরাপত্তা পরিকল্পনার ঘোষণা করে দেশটি।
এইচডিএমএস ট্রাইসন ডেনমার্কের চারটি যুদ্ধ জাহাজের মধ্যে একটি আর যেটি কিনা সারা বছর গ্রিনল্যান্ডের চারিদিকে থাকা পানিতে টহলরত অবস্থায় থাকে। তবে এবার ড্যানিশ নৌবহরে আরও নতুন যুদ্ধ জাহাজ সংযোজন করতে যাচ্ছে ডেনমার্ক।
এদিকে নিরাপত্তা জোরদার ইস্যুতে আর্কটিক অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সোমবার দেশটি দুই দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের নিরাপত্তা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। তবে ডেনমার্কের নিরাপত্তা জোরদারের ঘোষণাটি আকস্মিকভাবে আসেনি।
সম্প্রতি ট্রাম্প ডেনমার্কের অধীনে থাকা আধা- স্বায়ত্তশাসিত আর্কটিক অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড কোপেনহেগেনের কাছ থেকে কিনে নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে কিছুটা নড়েচড়ে বসে ডেনমার্ক কর্তৃপক্ষ।
এদিকে নিরাপত্তা জোরদারে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন দেশটির ডিফেন্স মিনিস্টার।
আর্কটিক নিয়ে ডেনমার্কের ঘোষিত পরিকল্পনায় রয়েছে নৌবাহিনীর জন্য তিনটি নতুন সামরিক যানের সংযোজন, দূরবর্তী নজরদারি বাড়াতে ড্রোনের সংখ্যা চারে উন্নীতের পাশাপাশি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নজরদারিও বাড়ানো হবে। এ
ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকলেও দ্বিপটির নিরাপত্তা বিবেচনায় সেখানে ডেনমার্কের সামরিক উপস্থিতি সীমিত। ড্যানিশ কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা ট্রাম্প প্রশাসন এই বিষয়টির সুযোগ নিতে পারে।
এর আগে ২০১৯ সালে প্রথমবার ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেসময় অ্যামেরিকার আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ডেনমার্কের অধীনে থাকা আধা-স্বায়ত্তশাসিত এই আর্কটিক অঞ্চলটি জরুরি বলেও উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে অধিগ্রহণের জন্য আর্থিক বা সামরিক বল প্রয়োগের মতো পন্থাগুলো নিয়ে খোলাসা করে কিছু বলেননি ট্রাম্প।
এদিকে দায়িত্ব গ্রহণের আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন কলে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য সম্মত না হলে শুল্কারোপের হুমকি দেন।
এছাড়াও শনিবার এয়ার ফোর্স ওয়ান পরিদর্শনকালে ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড নিয়ে বলেছন, আর্কটিক অঞ্চলে চায়না ও রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় অ্যামেরিকার নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ড একান্ত প্রয়োজন।
তবে কৌশলগত অবস্থান ও অসংখ্য খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ গ্রিনল্যান্ডের প্রতি বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশের আগ্রহ রয়েছে। এদিকে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে আগাম সতর্কতার কৌশলগত কারণে গ্রিনল্যান্ডের উত্তর-পশিমাঞ্চলে ইতিমধ্যে স্থায়ীভাবে অ্যামেরিকান সেনারা অবস্থান করছে।